Friday, March 4, 2016

জাফর পাঠানের কবিতা



চাই সীমান্তহীন বিশ্ব

এক ধরিত্রীর বুকে - একত্রে বসবাস
এক পৃথিবীকে নিয়েই-যত অভিলাষ,
এক আকাশ এক মাটিতেই প্রতিভাস
এক মানুষ জাতির-গীতি সুর বিভাস।

নিসর্গ খুলে দিয়েছে তার রূপ যৌবন
মানুষের জন্য নিজকে ত্যাগিছে পবন,
মানুষে বিলিয়ে দিয়ে- ধরার সঞ্জীবন
মানব আর ভবের- অপূর্ব কুঞ্জবন।

কেন তবে হবে-এত দেশ এত সীমানা
কেন ধর্মের বিভেদে; বিভাজনকে মানা,
কেন জাত-পাত সম্পদে, চলবে অর্চনা
ধরণী ভাঙ্গার- সইতে হবে প্রবঞ্চনা ।

ভাঙ্গা বিশ্ব-ভাঙ্গা সীমানাকে আমি মানিনা
বর্ণ বৈষম্যের ভেদকে, চিনিনা জানিনা,
দেখতে শুধু চাই, এক গ্রহে- এক দেশ
তুলে দিয়ে সীমানা-গুটাতে হবে বিদ্বেষ।








কবি পরিচিতি-

জাফর পাঠান
সমসাময়িক তরুণ কবিদের মধ্যে পরিচিত নাম ।
তার কবিতায় সমকালীন জীবনবোধ ও বুদ্ধিমত্তার ছাপ স্পষ্ট জাফর পাঠানের সাম্প্রতিক প্রকাশিত তিনটি বই : কাব্যগ্রন্থ- দ্রোহের দহন - বইমেলা- ২০১৪,  কাব্যগ্রন্থ- নাবুদের নাদ -বইমেলা -২০১৫, আর এবার বইমেলা- ২০১৬ তে  প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - অগ্নিবাণ ।


মনিরুজ্জামান জীবনের ৩টি কবিতা



প্রকৃতি ও বিলাসী মন

যখন তোমাকে কিছুই বলার থাকেনা আমার,
তখন নিকষ কালো আঁধার নীলিমাকে ভেদ করে
উঠে আসে পূর্ণিমার চাঁদ,
লুফে নেয় বাগানের ফুল,কচি সবুজ দূর্বাঘাস।
গ্রীষ্মের দুর্দান্ত দুপুরে প্রচন্ড দাব্দাহে সু-শীতল ছায়ার সন্ধানে
হেঁটে চলে দীর্ঘ মেঠোপথ ঘর্মাক্ত ক্লান্ত তৃষ্ণার্ত পথিক,
বুকে তার অতৃপ্ত পিপাসার জ্বালা চাতক পাখির মতো
শুধু জল খোঁজে চারিদিকে।
যখন জমাট কালো মেঘে ঢেকে যায় নীলিমার বিস্তীর্ণ আঁচল,
বয়ে যায় ঝড়ো হাওয়া,অতঃপর মৃদুমন্দ দখিনা সমীরণ,
তখন বুকের গভীর থেকে বেড়িয়ে আসে তার স্বস্তির নিঃশ্বাস।
শীতল জলে সিক্ত হয়,ঘর বাড়ী বাগান উঠোন।
ফসলের পোড়া মাঠ আবার হয়ে উঠে সবুজ সতেজ,
বিশুদ্ধ জলে স্নান করে যেন শুদ্ধ হয় পৃথিবী।
আর উঠোনের মাঝে বিশুদ্ধ জলে ভিজে
পরিশুদ্ধ হয় ক্লান্ত শালিক যুগল।

তুমি ইচ্ছে করলে

তুমি ইচ্ছে করলে হতে পারতে
প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের
কবিতার লেখা বই,
তুমি হতে পারতে,
আমার লাল সবুজ পোষা পাখিটা।
মন বাড়িয়ে ডাকি যখন,
দিক হারা না হয়ে উড়তে উড়তে এসে
বসলে আমার মনের খাঁচায়।
তুমি হতে পারতে আমার বারান্দার বাগানের
পাতাবিহীন গাছ ভর্তি ফুলের মেজেন্ডা বাগান বিলাস,
ছুঁয়ে ছুঁয়ে দিতাম ফুলগুলিতে আলতো ছোঁয়ায়
স্পর্শ পেয়ে তুমি কেঁপে কেঁপে উঠতে।
তুমি হতে যদি স্বচ্ছ জলের সরোবর
ঝুম বৃষ্টিতে ঝুমুর ঝুমুর ধ্বনিতে উচাটন হতো মন,
শীতল জলের অতলে ডুব দিয়ে
তোমার বুকের অথৈ তরঙ্গে ভেসে যেতাম।
হলেই বা আমার প্রিয় গল্পের বই,
শব্দে শব্দে বাক্যে বাক্যে মিশে থাকতে
পড়তে পড়তে সকাল সন্ধ্যা ভোর কেটে যেতো অবলীলায়,
পাতায় পাতায় তোমায় ছুঁয়ে দিতাম আর,
পেতাম তোমার ভালোবাসার স্পর্শ।
অথবা হতে আমার মুঠোফোন,
প্রতিটা বাটন জুড়ে থাকতে তুমি, এফএম রেডিও আর,
রিংটোনের ঝংকারে অনু-রণন হয়ে বাজতো বুকে
কানে লাগিয়ে প্রতি মুহুর্ত শুনতাম তোমার সব না বলা কথা।
হও না একটু আমার স্বাধের গিটার
টুং টাং মৃদু ধ্বনির ঊর্মিতে দুলবে মন,
গিটারে তারে তারে দশ আংগুলের স্পর্শ দিতাম তোমায়
শিহরিত তনুমন কাছে পেতাম তোমায় সর্বক্ষণ।
আমার সমস্ত চাওয়াগুলোই অন্তর দিয়ে
এখানে অশুচির স্থান নেই,
নেই কোনো ধুম্রজালের প্রয়াস, মন থেকে চাওয়া
তোমায় পাওয়ার আকাঙ্খা সব কিছুর উর্ধ্বে অবিমিশ্র।

অপ্রকাশিত ভালবাসা

চাঁদহীন নিস্তব্দ রাতের আকাশে-
ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে মনে মনে চোখের ইশারায়
কাছে ডাকি তোমায়।
হৃদয়ের ডাক কানে কি তোমার পৌঁছায়?
অপেক্ষায় থাকি শুধু বেলা অবেলায়!!
হয়তো তুমিও আমায় ডাকো মনে মনে
আমায় নিয়ে হারাতে চাও ওই দূরের বনে
ভেসে যেতে চাও সুরে সুরে গানে গানে
তুমিও হয়তো অপেক্ষার প্রহর গুনো উচাটনে।
ভালবাসলে বলতে হয়
অপ্রকাশিত ভালবাসা ভালো নয়
এতে ভালবাসার পাখিরা একে অপর থেকে দূরে রয়
রিক্ততায় পূর্ণ জীবন হয় জ্বালাময়।
না বলা ভালবাসায় তুমি আর আমি অধরা
সময় যে যাচ্ছে চলে আমি তুমি ছাড়া
একদিন কিন্তু হতে হবে সব হারা
থাকব না আমি থাকবে না তুমি,
শুধু অটুট থাকবে এই ধরা।
ভালবাসা হলো বয়ে চলা এক নদী
বলা না বলায় কি-ই বা যাবে আসবে যদি,
ভালবাসা প্রকাশ করলেই না অদ্যাবদি
সবই চলবে, থাকবে....
শুধু সময় করে না অপেক্ষা বয়ে যায় নিরবধি ।




পরিচিতি-

মনিরুজ্জামান জীবন চাঁদপুর সদর কচুয়া উপজেলার অন্তর্গত পূর্ব তেতৈয়া গ্রামে ১৯৮১ সালের পহেলা জানুয়ারীতে জন্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের আইটি ডিপার্টমেন্টে কর্মরত আছেন। শৈশব থেকেই সাহিত্যিক অঙ্গনকে নিয়ে লেখালেখির চেষ্টা করে।

Friday, March 4, 2016

জাফর পাঠানের কবিতা



চাই সীমান্তহীন বিশ্ব

এক ধরিত্রীর বুকে - একত্রে বসবাস
এক পৃথিবীকে নিয়েই-যত অভিলাষ,
এক আকাশ এক মাটিতেই প্রতিভাস
এক মানুষ জাতির-গীতি সুর বিভাস।

নিসর্গ খুলে দিয়েছে তার রূপ যৌবন
মানুষের জন্য নিজকে ত্যাগিছে পবন,
মানুষে বিলিয়ে দিয়ে- ধরার সঞ্জীবন
মানব আর ভবের- অপূর্ব কুঞ্জবন।

কেন তবে হবে-এত দেশ এত সীমানা
কেন ধর্মের বিভেদে; বিভাজনকে মানা,
কেন জাত-পাত সম্পদে, চলবে অর্চনা
ধরণী ভাঙ্গার- সইতে হবে প্রবঞ্চনা ।

ভাঙ্গা বিশ্ব-ভাঙ্গা সীমানাকে আমি মানিনা
বর্ণ বৈষম্যের ভেদকে, চিনিনা জানিনা,
দেখতে শুধু চাই, এক গ্রহে- এক দেশ
তুলে দিয়ে সীমানা-গুটাতে হবে বিদ্বেষ।








কবি পরিচিতি-

জাফর পাঠান
সমসাময়িক তরুণ কবিদের মধ্যে পরিচিত নাম ।
তার কবিতায় সমকালীন জীবনবোধ ও বুদ্ধিমত্তার ছাপ স্পষ্ট জাফর পাঠানের সাম্প্রতিক প্রকাশিত তিনটি বই : কাব্যগ্রন্থ- দ্রোহের দহন - বইমেলা- ২০১৪,  কাব্যগ্রন্থ- নাবুদের নাদ -বইমেলা -২০১৫, আর এবার বইমেলা- ২০১৬ তে  প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - অগ্নিবাণ ।


মনিরুজ্জামান জীবনের ৩টি কবিতা



প্রকৃতি ও বিলাসী মন

যখন তোমাকে কিছুই বলার থাকেনা আমার,
তখন নিকষ কালো আঁধার নীলিমাকে ভেদ করে
উঠে আসে পূর্ণিমার চাঁদ,
লুফে নেয় বাগানের ফুল,কচি সবুজ দূর্বাঘাস।
গ্রীষ্মের দুর্দান্ত দুপুরে প্রচন্ড দাব্দাহে সু-শীতল ছায়ার সন্ধানে
হেঁটে চলে দীর্ঘ মেঠোপথ ঘর্মাক্ত ক্লান্ত তৃষ্ণার্ত পথিক,
বুকে তার অতৃপ্ত পিপাসার জ্বালা চাতক পাখির মতো
শুধু জল খোঁজে চারিদিকে।
যখন জমাট কালো মেঘে ঢেকে যায় নীলিমার বিস্তীর্ণ আঁচল,
বয়ে যায় ঝড়ো হাওয়া,অতঃপর মৃদুমন্দ দখিনা সমীরণ,
তখন বুকের গভীর থেকে বেড়িয়ে আসে তার স্বস্তির নিঃশ্বাস।
শীতল জলে সিক্ত হয়,ঘর বাড়ী বাগান উঠোন।
ফসলের পোড়া মাঠ আবার হয়ে উঠে সবুজ সতেজ,
বিশুদ্ধ জলে স্নান করে যেন শুদ্ধ হয় পৃথিবী।
আর উঠোনের মাঝে বিশুদ্ধ জলে ভিজে
পরিশুদ্ধ হয় ক্লান্ত শালিক যুগল।

তুমি ইচ্ছে করলে

তুমি ইচ্ছে করলে হতে পারতে
প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের
কবিতার লেখা বই,
তুমি হতে পারতে,
আমার লাল সবুজ পোষা পাখিটা।
মন বাড়িয়ে ডাকি যখন,
দিক হারা না হয়ে উড়তে উড়তে এসে
বসলে আমার মনের খাঁচায়।
তুমি হতে পারতে আমার বারান্দার বাগানের
পাতাবিহীন গাছ ভর্তি ফুলের মেজেন্ডা বাগান বিলাস,
ছুঁয়ে ছুঁয়ে দিতাম ফুলগুলিতে আলতো ছোঁয়ায়
স্পর্শ পেয়ে তুমি কেঁপে কেঁপে উঠতে।
তুমি হতে যদি স্বচ্ছ জলের সরোবর
ঝুম বৃষ্টিতে ঝুমুর ঝুমুর ধ্বনিতে উচাটন হতো মন,
শীতল জলের অতলে ডুব দিয়ে
তোমার বুকের অথৈ তরঙ্গে ভেসে যেতাম।
হলেই বা আমার প্রিয় গল্পের বই,
শব্দে শব্দে বাক্যে বাক্যে মিশে থাকতে
পড়তে পড়তে সকাল সন্ধ্যা ভোর কেটে যেতো অবলীলায়,
পাতায় পাতায় তোমায় ছুঁয়ে দিতাম আর,
পেতাম তোমার ভালোবাসার স্পর্শ।
অথবা হতে আমার মুঠোফোন,
প্রতিটা বাটন জুড়ে থাকতে তুমি, এফএম রেডিও আর,
রিংটোনের ঝংকারে অনু-রণন হয়ে বাজতো বুকে
কানে লাগিয়ে প্রতি মুহুর্ত শুনতাম তোমার সব না বলা কথা।
হও না একটু আমার স্বাধের গিটার
টুং টাং মৃদু ধ্বনির ঊর্মিতে দুলবে মন,
গিটারে তারে তারে দশ আংগুলের স্পর্শ দিতাম তোমায়
শিহরিত তনুমন কাছে পেতাম তোমায় সর্বক্ষণ।
আমার সমস্ত চাওয়াগুলোই অন্তর দিয়ে
এখানে অশুচির স্থান নেই,
নেই কোনো ধুম্রজালের প্রয়াস, মন থেকে চাওয়া
তোমায় পাওয়ার আকাঙ্খা সব কিছুর উর্ধ্বে অবিমিশ্র।

অপ্রকাশিত ভালবাসা

চাঁদহীন নিস্তব্দ রাতের আকাশে-
ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে মনে মনে চোখের ইশারায়
কাছে ডাকি তোমায়।
হৃদয়ের ডাক কানে কি তোমার পৌঁছায়?
অপেক্ষায় থাকি শুধু বেলা অবেলায়!!
হয়তো তুমিও আমায় ডাকো মনে মনে
আমায় নিয়ে হারাতে চাও ওই দূরের বনে
ভেসে যেতে চাও সুরে সুরে গানে গানে
তুমিও হয়তো অপেক্ষার প্রহর গুনো উচাটনে।
ভালবাসলে বলতে হয়
অপ্রকাশিত ভালবাসা ভালো নয়
এতে ভালবাসার পাখিরা একে অপর থেকে দূরে রয়
রিক্ততায় পূর্ণ জীবন হয় জ্বালাময়।
না বলা ভালবাসায় তুমি আর আমি অধরা
সময় যে যাচ্ছে চলে আমি তুমি ছাড়া
একদিন কিন্তু হতে হবে সব হারা
থাকব না আমি থাকবে না তুমি,
শুধু অটুট থাকবে এই ধরা।
ভালবাসা হলো বয়ে চলা এক নদী
বলা না বলায় কি-ই বা যাবে আসবে যদি,
ভালবাসা প্রকাশ করলেই না অদ্যাবদি
সবই চলবে, থাকবে....
শুধু সময় করে না অপেক্ষা বয়ে যায় নিরবধি ।




পরিচিতি-

মনিরুজ্জামান জীবন চাঁদপুর সদর কচুয়া উপজেলার অন্তর্গত পূর্ব তেতৈয়া গ্রামে ১৯৮১ সালের পহেলা জানুয়ারীতে জন্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের আইটি ডিপার্টমেন্টে কর্মরত আছেন। শৈশব থেকেই সাহিত্যিক অঙ্গনকে নিয়ে লেখালেখির চেষ্টা করে।

Friday, March 4, 2016

জাফর পাঠানের কবিতা



চাই সীমান্তহীন বিশ্ব

এক ধরিত্রীর বুকে - একত্রে বসবাস
এক পৃথিবীকে নিয়েই-যত অভিলাষ,
এক আকাশ এক মাটিতেই প্রতিভাস
এক মানুষ জাতির-গীতি সুর বিভাস।

নিসর্গ খুলে দিয়েছে তার রূপ যৌবন
মানুষের জন্য নিজকে ত্যাগিছে পবন,
মানুষে বিলিয়ে দিয়ে- ধরার সঞ্জীবন
মানব আর ভবের- অপূর্ব কুঞ্জবন।

কেন তবে হবে-এত দেশ এত সীমানা
কেন ধর্মের বিভেদে; বিভাজনকে মানা,
কেন জাত-পাত সম্পদে, চলবে অর্চনা
ধরণী ভাঙ্গার- সইতে হবে প্রবঞ্চনা ।

ভাঙ্গা বিশ্ব-ভাঙ্গা সীমানাকে আমি মানিনা
বর্ণ বৈষম্যের ভেদকে, চিনিনা জানিনা,
দেখতে শুধু চাই, এক গ্রহে- এক দেশ
তুলে দিয়ে সীমানা-গুটাতে হবে বিদ্বেষ।








কবি পরিচিতি-

জাফর পাঠান
সমসাময়িক তরুণ কবিদের মধ্যে পরিচিত নাম ।
তার কবিতায় সমকালীন জীবনবোধ ও বুদ্ধিমত্তার ছাপ স্পষ্ট জাফর পাঠানের সাম্প্রতিক প্রকাশিত তিনটি বই : কাব্যগ্রন্থ- দ্রোহের দহন - বইমেলা- ২০১৪,  কাব্যগ্রন্থ- নাবুদের নাদ -বইমেলা -২০১৫, আর এবার বইমেলা- ২০১৬ তে  প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ - অগ্নিবাণ ।


মনিরুজ্জামান জীবনের ৩টি কবিতা



প্রকৃতি ও বিলাসী মন

যখন তোমাকে কিছুই বলার থাকেনা আমার,
তখন নিকষ কালো আঁধার নীলিমাকে ভেদ করে
উঠে আসে পূর্ণিমার চাঁদ,
লুফে নেয় বাগানের ফুল,কচি সবুজ দূর্বাঘাস।
গ্রীষ্মের দুর্দান্ত দুপুরে প্রচন্ড দাব্দাহে সু-শীতল ছায়ার সন্ধানে
হেঁটে চলে দীর্ঘ মেঠোপথ ঘর্মাক্ত ক্লান্ত তৃষ্ণার্ত পথিক,
বুকে তার অতৃপ্ত পিপাসার জ্বালা চাতক পাখির মতো
শুধু জল খোঁজে চারিদিকে।
যখন জমাট কালো মেঘে ঢেকে যায় নীলিমার বিস্তীর্ণ আঁচল,
বয়ে যায় ঝড়ো হাওয়া,অতঃপর মৃদুমন্দ দখিনা সমীরণ,
তখন বুকের গভীর থেকে বেড়িয়ে আসে তার স্বস্তির নিঃশ্বাস।
শীতল জলে সিক্ত হয়,ঘর বাড়ী বাগান উঠোন।
ফসলের পোড়া মাঠ আবার হয়ে উঠে সবুজ সতেজ,
বিশুদ্ধ জলে স্নান করে যেন শুদ্ধ হয় পৃথিবী।
আর উঠোনের মাঝে বিশুদ্ধ জলে ভিজে
পরিশুদ্ধ হয় ক্লান্ত শালিক যুগল।

তুমি ইচ্ছে করলে

তুমি ইচ্ছে করলে হতে পারতে
প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের
কবিতার লেখা বই,
তুমি হতে পারতে,
আমার লাল সবুজ পোষা পাখিটা।
মন বাড়িয়ে ডাকি যখন,
দিক হারা না হয়ে উড়তে উড়তে এসে
বসলে আমার মনের খাঁচায়।
তুমি হতে পারতে আমার বারান্দার বাগানের
পাতাবিহীন গাছ ভর্তি ফুলের মেজেন্ডা বাগান বিলাস,
ছুঁয়ে ছুঁয়ে দিতাম ফুলগুলিতে আলতো ছোঁয়ায়
স্পর্শ পেয়ে তুমি কেঁপে কেঁপে উঠতে।
তুমি হতে যদি স্বচ্ছ জলের সরোবর
ঝুম বৃষ্টিতে ঝুমুর ঝুমুর ধ্বনিতে উচাটন হতো মন,
শীতল জলের অতলে ডুব দিয়ে
তোমার বুকের অথৈ তরঙ্গে ভেসে যেতাম।
হলেই বা আমার প্রিয় গল্পের বই,
শব্দে শব্দে বাক্যে বাক্যে মিশে থাকতে
পড়তে পড়তে সকাল সন্ধ্যা ভোর কেটে যেতো অবলীলায়,
পাতায় পাতায় তোমায় ছুঁয়ে দিতাম আর,
পেতাম তোমার ভালোবাসার স্পর্শ।
অথবা হতে আমার মুঠোফোন,
প্রতিটা বাটন জুড়ে থাকতে তুমি, এফএম রেডিও আর,
রিংটোনের ঝংকারে অনু-রণন হয়ে বাজতো বুকে
কানে লাগিয়ে প্রতি মুহুর্ত শুনতাম তোমার সব না বলা কথা।
হও না একটু আমার স্বাধের গিটার
টুং টাং মৃদু ধ্বনির ঊর্মিতে দুলবে মন,
গিটারে তারে তারে দশ আংগুলের স্পর্শ দিতাম তোমায়
শিহরিত তনুমন কাছে পেতাম তোমায় সর্বক্ষণ।
আমার সমস্ত চাওয়াগুলোই অন্তর দিয়ে
এখানে অশুচির স্থান নেই,
নেই কোনো ধুম্রজালের প্রয়াস, মন থেকে চাওয়া
তোমায় পাওয়ার আকাঙ্খা সব কিছুর উর্ধ্বে অবিমিশ্র।

অপ্রকাশিত ভালবাসা

চাঁদহীন নিস্তব্দ রাতের আকাশে-
ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে মনে মনে চোখের ইশারায়
কাছে ডাকি তোমায়।
হৃদয়ের ডাক কানে কি তোমার পৌঁছায়?
অপেক্ষায় থাকি শুধু বেলা অবেলায়!!
হয়তো তুমিও আমায় ডাকো মনে মনে
আমায় নিয়ে হারাতে চাও ওই দূরের বনে
ভেসে যেতে চাও সুরে সুরে গানে গানে
তুমিও হয়তো অপেক্ষার প্রহর গুনো উচাটনে।
ভালবাসলে বলতে হয়
অপ্রকাশিত ভালবাসা ভালো নয়
এতে ভালবাসার পাখিরা একে অপর থেকে দূরে রয়
রিক্ততায় পূর্ণ জীবন হয় জ্বালাময়।
না বলা ভালবাসায় তুমি আর আমি অধরা
সময় যে যাচ্ছে চলে আমি তুমি ছাড়া
একদিন কিন্তু হতে হবে সব হারা
থাকব না আমি থাকবে না তুমি,
শুধু অটুট থাকবে এই ধরা।
ভালবাসা হলো বয়ে চলা এক নদী
বলা না বলায় কি-ই বা যাবে আসবে যদি,
ভালবাসা প্রকাশ করলেই না অদ্যাবদি
সবই চলবে, থাকবে....
শুধু সময় করে না অপেক্ষা বয়ে যায় নিরবধি ।




পরিচিতি-

মনিরুজ্জামান জীবন চাঁদপুর সদর কচুয়া উপজেলার অন্তর্গত পূর্ব তেতৈয়া গ্রামে ১৯৮১ সালের পহেলা জানুয়ারীতে জন্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের আইটি ডিপার্টমেন্টে কর্মরত আছেন। শৈশব থেকেই সাহিত্যিক অঙ্গনকে নিয়ে লেখালেখির চেষ্টা করে।